• শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বড়লেখায় ধান কাটার সময় বজ্রপাতে প্রাণ গেল ১ চা শ্রমিকের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের লড়াইয়ে আগামীকাল (বুধবার) ভোর ৬ টায় মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। জুড়ীতে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ৮৭১পিস ইয়াবা উদ্ধার, ০১টি সিএনজিসহ ০২ জন আটক মৌলভীবাজারের বড়লেখায় গলায় ফাঁস লাগানো এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সিলেটের পাঁচ ভাই ও পানসী রেস্টুরেন্টকে জরিমানা মামলা থেকে আ.লীগ নেত্রীর নাম কাটতে তদবির, ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। মাগুরায় আছিয়ার মরদেহ, এলাকায় শোকের মাতম মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে

কে শুনবে গাছের বোবা কান্না

মোঃ রায়হান / ৩০৬ Time View
Update : সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

কে শুনবে গাছের বোবা কান্না? বিজ্ঞাপন আর রাজনৈতিক প্রচারণায় ছেয়ে গেছে ঠাকুরগাঁওয়ে মহাসড়কে পাশে থাকা বৃক্ষের মধ্যে পেরেকে সয়লাব। আর এসব পোস্টার, ফেস্টুন ছেয়ে যাচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। প্রকৃতি আর মানুষের বন্ধু গাছের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কিছু মানুষের বিকৃত মানসিকতার পরিচয় বলে দাবি সচেতন মহলের।

জেলা জুড়ে বিভিন্ন সড়কগুলোতে গাছের মধ্যে লাগানো বিজ্ঞাপন বোর্ডে সয়লাব। এতে করে পরিবেশের সৌন্দর্য্য নষ্ট হবার পাশাপাশি পরিবেশ ভারসাম্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। কথায় আছে গাছ মানুষের পরম বন্ধু। গাছ মানুষকে অক্সিজেন দেয়। সেই অক্সিজেন নিয়ে মানুষ ও প্রাণী বেঁচে থাকে। জীবন বাঁচানো সেই গাছেরই ক্ষতি করছে কিছু বিকৃত মানসিকতার মানুষ। গাছ শুধু আমাদের জীবনই বাঁচায় না বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও বাড়ি-ঘর রক্ষা করে। কিন্তু এখন উল্টো চিত্র দেখা যায় মানুষের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে সেই গাছেই দুর্যোগের বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সড়কে লাগানো ছোট বড় গাছের গায়ে লোহার পেরেক দিয়ে আটকানো হয়েছে অসংখ্য সাইন বোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড। বিভিন্ন গাছে ঝুলছে ব্যবসায়িক, চিকিৎসক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচার-প্রচারণার অসংখ্য ছোট-বড় সাইন বোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিজ্ঞাপন। পিছিয়ে নেই বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং সেন্টারগুলোও। এসব ব্যানার, ফেস্টুন, বিজ্ঞাপন ঝোলানো হয়েছে পেরেক ঠুকে। এক একটি গাছ যেন এক একটি বিজ্ঞাপন বোর্ডের খুটি। কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই যে যেখানে পারছে পেরেক ঠুকে গাছকে বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করছে। এতে বর্ষা মৌসুমে ছোট-বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় পথচারী ও যানবাহনগুলোকে।

ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দা ফরহাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু সড়কে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে আনুমানিক পাঁচ শতাধিকেরও বেশি গাছে পেরেক দিয়ে পোস্টার, ফেস্টুন লাগানো। অবৈধভাবে গাছে পেরেক দিয়ে পোস্টার ফেস্টুন লাগিয়ে মারাত্বকভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করা হচ্ছে।

আইন থাকলেও শুধু কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ রয়েছে। কোন দিন দেখলাম না কোন অভিযান পরিচালনা করে জেল, জরিমানা করা হয়েছে।

একজন পরিবেশবিদ বলেন, পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়। তা দিয়ে পানি ও তার সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব প্রবেশ করে। এতে গাছে দ্রুত পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এতে করে গাছটি মারাও যেতে পারে। তাই কোনো গাছে পেরেক ঠোকা মানে ওই গাছের চরম ক্ষতি করা। গাছের পরিচর্যা করার বদলে উল্টো বিজ্ঞাপনের নামে গাছের চরম ক্ষতি করা হচ্ছে। গাছের প্রতি এই নিষ্ঠুর আচরণ দেশের বন আইনে দন্ডনীয় অপরাধ হওয়ায় কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে কার্যকরি পদক্ষেপ নেবার দাবি জানান তিনি।

স্বপ্ন পূরণ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রায়হান বলেন, শহরের সৌন্দর্য রক্ষা ও পরিচ্ছন্নতা বিধানে সরকার ২০১২ সালে দেয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১২ পাস করেন। সেখানে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কেউ পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড লাগানে অর্থদণ্ডসহ বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেবার বিধান রয়েছে। কিন্তু এই আইনের প্রয়োগ না থাকায় দিন দিন বিজ্ঞাপনের নামে সৌন্দর্য নষ্ট করার যেন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা নিয়মিত রাখার দাবি করেন তিনি।


More News Of This Category

bdit.com.bd